1. mosarof.rana@gmail.com : CTG DAILY NEWS 24 : CTG Daily News 24
  2. info@www.ctgdailynews24.online : CTG DAILY 24 :
শুক্রবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৫:৫৮ পূর্বাহ্ন

চট্রগ্রামে মাদকাসক্ত নিরাময় কেন্দ্রের নামে চলছে মাদক ব্যবসা

  • প্রকাশিত: বুধবার, ২০ আগস্ট, ২০২৫
  • ৭০৯ বার পড়া হয়েছে

চট্রগ্রাম নগরীতে বিভিন্ন এলাকায় ভাড়া বাসা নিয়ে ব্যাঙের ছাতার মতো প্রতিনিয়ত গজিয়ে উঠছে নতুন নতুন মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্র। অনুসন্ধানে দেখা যায়, বেশিরভাগ নিরাময় কেন্দ্রে তালা মেরে রাখা হয় মাদকাসক্তদের। মাদকাসক্তে আক্রন্তদের সুস্থ জীবনে ফিরিয়ে আনতে পরিবারের লোকেরা এসব চিকিৎসা কেন্দ্র্রে পাঠিয়ে নানা উৎকণ্ঠায় থাকেন। নামে-বেনামে গড়ে উঠা এসব নিরাময় কেন্দ্রে চিকিৎসার নামে মাদকাসক্তদের ওপর চলে অমানবিক নির্যাতন। জেলখানার মতো ছোট্ট একটি রুমে মাদকাসক্তদের রেখে চিকিৎসার নামে  ব্যয়ভার হিসেবে পরিবারের কাছ থেকে হাতিয়ে নেয়া হয় হাজার হাজার টাকা। চিকিৎসক নেই, নেই চিকিৎসা সরঞ্জাম, রোগীরা ঘুমায় মেঝেতে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সেবামূলক প্রতিষ্ঠান হিসেবে দেখিয়ে কিছু অসাধু চক্র ব্যবসা কেন্দ্রে পরিণত করে পরিচালনা করছে।

অনুসন্ধানে জানা যায়,৫ই আগষ্ট সরকার পতনের পর আওয়ামীলীগ এর অনেক ক্যাডার আশ্রয় নিয়েছে এসব মাদকাসক্ত চিকিৎসা কেন্দ্রে। সে খানে নিরাপদ এ বসে তারা চালাচ্ছে আন্ডার ওয়াল্ড। নিরাপদ এ বসে মাদক গ্রহন করছে তারা সেখানে। এসব কারনে প্রশাসনের দৃষ্টির আড়ালে থাকাতে ভর্তি নিচ্ছে না সত্যিকার মাদকাসক্ত কোন রুগী।

অভিযোগ আছে মাদকাসক্ত আক্রান্ত একটি ছেলেকে তার পরিবার বিভিন্ন মাদকাসক্ত নিরাময় কেন্দ্রে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করাতে চাইলেও তাকে সিট খালি নাই এই অজুহাতে ভর্তি নেওয়া হয় নাই। স্রোত, এর্লাট, দীপ্ত, ভোর, হেল্প এসকল মাদকাসক্ত চিকিৎসা কেন্দ্রে যোগা-যোগ করে তারা ব্যর্থ হয়েছেন পেশেন্ট ভর্তি করতে।

অনুসন্ধান এ জানা যায়, স্রোত মাদকাসক্ত নিরাময় কেন্দ্র চালাচ্ছে সাবেক সেচ্ছাসেবকলীগ নেতা মুরিদুল আলম লিটন। লিটন আ জ ম নাছির এর ক্যাডার হিসেবে পরিচিত। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন এর সময় তাকে নগরীর ২ নাম্বার গেট এলাকায় অস্ত্র হাতে আন্দলোন কারীদের উপর হামলা করতে দেখা যায়। সরকার পতনের পর এলাকা পরিবর্তন করে নতুন করে আবার বাসা ভাড়া নিতে চালু করে নিরাময় কেন্দ্রের নামে ব্যবসা। বর্তমানে যেখানে আত্মগোপনে আছে একাধিক আওয়ামী সন্ত্রাসী।

পেশেন্ট ভর্তি নেওয়ার না বিষয়ে জানতে, দীপ্ত এর পরিচালক ফরহাদ আলম এর সাথে যোগা-যোগ করার চেষ্টা করা হলে তিনি মুঠোফোন এ কল রিসিভ করেন নাই। অনুসন্ধান এ জানা যায় ফরহাদ ব্যবসার উদ্দেশ্য নিয়ে মাদকাসক্ত নিরাময় কেন্দ্র চালায়। সে আগে লিটন এর পার্টনার ছিল।

জানা যায়, এসব কেন্দ্রে চিকিৎসা সুবিধা বলতে কিছু নেই। নানা অভিযোগ আর চিকিৎসার নামে রোগীর ওপর শারীরিক নির্যাতন, মাদক থেকে মুক্ত করার পরিবর্তে চিকিৎসা কেন্দ্রের মধ্যে মাদক সেবন করানো, জেলখানার আসামীদের মতো বন্দি করে রেখে রোগীর স্বজনদের কাছ থেকে ইচ্ছামতো অর্থ আদায় করে নেয়া হয়। বিশেষায়িত এসব চিকিৎসাকেন্দ্রের মধ্যে গুটিকয়েক ছাড়া বাকিগুলোর অনুমোদন পর্যন্ত নেই। আর যেগুলোর অনুমোদন আছে সেগুলোতেও নেই অভিজ্ঞ চিকিৎসক বা কর্মী, পরীক্ষা-নিরীক্ষার প্রয়োজনীয় উপকরণও নেই এসব কেন্দ্রে। নূন্যতম মান বজায় রেখে মাদকাসক্তদের চিকিৎসা করা তো দূরের কথা, অনেক ক্ষেত্রে অপচিকিৎসায় রোগীর প্রাণ সংহারের ঘটনাও ঘটে। নজরদারির কোনো বালাই না থাকায় এসব কেন্দ্র কোনো ফল বয়ে আনছে না মাদকাসক্তদের জন্য।

সিটিজি ডেইলি নিউজ ২৪ এর অনুসন্ধানে জানা গেছে, কোনো প্রকার নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে ঢাকাসহ সারা দেশে গড়ে উঠছে মাদক নিরাময় কেন্দ্র নামের ‘ব্যবসা’ প্রতিষ্ঠান। ডিএনসির চট্রগ্রাম মেট্রোর মহাপরিচালক (ডিজি) হুমায়ুন কবীর খন্দকার বলেন, সমস্য হচ্ছে মাদকাসক্তদের যে দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসা দিতে হয় তা অনেকেই জানেন না। নির্যাতন, অনিয়ম ও হত্যার অভিযোগ খতিয়ে দেখা হয় কি না, প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, মাদকাসক্ত রোগীরা অনেক সময় বিগড়ে যায়। তখন ঘুমের ওষুধ দিতে হয়। অনেক সময় শারীরিক বল প্রয়োগ করতে হয়! সুনির্দিষ্ট কোনো নির্যাতনের অভিযোগ থাকলে আমাদের জানাতে হবে। এদিক-ওদিক অভিযোগ করে লাভ নেই। এগুলো দেখার জন্য একজন সহকারী পরিচালক আছেন। আর কেউ মারা গেলে সেটা তদন্ত করবে পুলিশ। এখানে আমাদের কোনো বিষয় নেই! পেশেন্ট ভর্তি না নেওয়ার বিষয়টি তিনি তদন্ত করে ব্যবস্থা নিবেন বলে জানান।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বেসরকারি পর্যায়ে মাদকাসক্তি পরামর্শ কেন্দ্র, মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্র ও মাদকাসক্ত পুনর্বাসন কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা বা সুষ্ঠ পরিচালনার জন্য ২০০৫ সালে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে একটি বিধিমালা প্রণীত হয়। সেখানে ৪(খ) বিধিমালায় বলা হয়েছে, এ ধরনের কেন্দ্র সুরক্ষিত পাকা বাড়িসহ আবাসিক এলাকায় হতে হবে। এতে পর্যাপ্ত আলো-বাতাসের সুবিধাসহ নিরিবিলি সুন্দর পরিবেশ থাকতে হবে। আরো বলা আছে, কেন্দ্রে একজন মাদকাসক্ত রোগীর জন্য গড়ে কমপক্ষে ৮০ বর্গফুট জায়গা ও পর্যাপ্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা থাকতে হবে। বহুতল ভবনের তৃতীয় তলা বা তার চেয়ে ওপরের তলায় অবস্থিত হলে লিফট থাকতে হবে। (গ) ধারায় বলা আছে, প্রতি ১০ বিছানার জন্য আলাদা একটি টয়লেট ও পানীয়জলের সুব্যবস্থাসহ কমপক্ষে একজন মনোরোগ চিকিৎসক (সার্বক্ষণিক ও খন্ডকালীন), একজন চিকিৎসক, দুজন প্রশিক্ষণপ্রাাপ্ত নার্স বা বয়, একজন সুইপার বা আয়া এবং জীবনরক্ষাকারী উপকরণ ও অত্যাবশ্যক ওষুধপত্র থাকতে হবে। তবে রাজধানীর বেশ কয়েকটি মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্র ঘুরে দেখা গেছে, এসব নিয়ম কেউ মানছে না, কোন নিয়মনীতির বালাই নেই ।

নগরীর ফয়েজলেক এলাকায় অবস্থিত হেল্প মাদকাসক্ত চিকিৎসা কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যা, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ, অন্ধকার বাড়ি,পর্যাপ্ত আলো বাতাস নেই এমন জায়গায় ভাড়া করা বাসায় চলছে এর কার্যক্রম। চিকিৎসার নামে প্রতি রুগির পরিবার থেকে প্রতি মাসে ২০-৫০ হাজার টাকা নিচ্ছে হেল্প। এত টাকা নেওয়ার পরও পেশেন্ট দের দেওয়া হচ্ছে পর্যাপ্ত খাওয়া। চিকিৎসা কেন্দ্রে পাওয়া যায় নি কোন আবাসিক চিকিৎসক। মাদকাসক্ত দের সাথেই রাখা হয়েছে মানসিক রুগী। একাধিক মাদকাসক্ত রুগীর সাথে কথা বলে জানা যায় হেল্প এ চিকিৎসার নামে চলছে গলাকাটা ব্যবসা।

এসব প্রতিষ্ঠানগুলোতে মাঝেমধ্যে অভিযান চালায় ডিএনসি ও সিভিল সার্জন। এ সময় সেখানকার অবস্থা দেখে কর্মকর্তারাও শিউরে ওঠেন। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নিরাময় কেন্দ্রগুলোর বেশির ভাগই মাদকাসক্তদের নির্মম ও অমানবিক পন্থায় চিকিৎসা দিচ্ছে।

শারীরিক অত্যাচার সহ নির্মম আচারন করা হয় পেশেন্ট দের সাথে।

মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. ফারুক আলম বলেন, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের বিপরীতে পুনর্বাসন কেন্দ্রের অর্ধশিক্ষিত ব্যবস্থাপক ও সাবেক মাদকাসক্তরা কখনই মাদকাসক্ত রোগের চিকিৎসার বিশেষজ্ঞ হতে পারে না। এক ধরনের ধারা ওরিয়েন্টশন কোর্সের নামে সনদ বিক্রি ও মডিউল বাণিজ্যে চলছে। হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে অসহায় পরিবার থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা।

আরো সংবাদ পড়ুন

পুরাতন সংবাদ পড়ুন

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০৩১
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত -২০২৫, আমাদের প্রকাশিত সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ।
ওয়েবসাইট ডিজাইন : ইয়োলো হোস্ট